সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৫২ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনে আইন মন্ত্রী আনিসুল হক বে-সরকারি ভাবে নির্বাচিত কসবায় ভোট দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১ আহত-৪ কসবায় এলজিইডি’র শ্রেষ্ঠ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান আগরতলায় স্রোত আয়োজিত লোকসংস্কৃতি উৎসব কসবা প্রেসক্লাব সভাপতি’র উপর হামলার প্রতিবাদে মানবন্ধন ও প্রতিবাদ সভা কসবায় চকচন্দ্রপুর হাফেজিয়া মাদ্রাসার বার্ষিক ফলাফল ঘোষণা, পুরস্কার বিতরণ ও ছবক প্রদান শ্রী অরবিন্দ কলেজের প্রথম নবীনবরণ অনুষ্ঠান আজ বছরের দীর্ঘতম রাত, আকাশে থাকবে চাঁদ বিএনপি-জামাত বিদেশীদের সাথে আঁতাত করেছে-কসবায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ১৩ দিনের জন্য ভোটের মাঠে নামছে সশস্ত্র বাহিনী
আজ ঈদে মিলাদুন্নবী: দো-জাহানে আনন্দের মাহেন্দ্রক্ষণ

আজ ঈদে মিলাদুন্নবী: দো-জাহানে আনন্দের মাহেন্দ্রক্ষণ

ড. এস এম শাহনূর।।
“সুবেহসাদেক বলছে, সেই দিন আর নেইতো দূরে,
ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) উদযাপিত হবে ঘরে ঘরে।
মুল্ল্যা মৌলানাদের মাঝে রইবেনা কোনো আড়াআড়ি
ধরবে সবে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের গাড়ি।”
পৃথিবীতে কোটি কোটি মুসলমানের বাস। ওনারা সবাই মুসলমান হলেও সবাই ঈমানদার নয়। ঈমানদার মুসলমানের কাছে তার স্ত্রী, সন্তান ও সম্পদের চেয়ে রাসূলের প্রতি মহব্বত বেশি। ওনারাই সফলকামদের অন্তর্ভুক্ত। ওনারাই মুমিন। ঈদে মিলাদুন্নবী মূলতঃ সে-সকল মুমিন বান্দার ঈদ।
হাবীবে খোদা রাহমাতুলল্লিল আলামীন হুজুর আকরাম (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) হচ্ছেন সর্বযুগের সর্বকালের শ্রেষ্ঠতম আদর্শ। আল্লাহ পাক তাঁকে “সিরাজাম-মুনিরা” বা উজ্জ্বল প্রদীপরূপে প্রেরণ করতঃ ’ওয়া রাফানা লাকা যিকরাকা'(আমি আপনার স্তুতিকে উচ্চ মর্যাদা দান করেছি) এর সুমহান তাজ পরিধান করিয়েছেন।তাই কারো পক্ষেই নবীজির সামান্যতম শানও বর্ননা করা সম্ভব নয়।বস্ততঃস্বয়ং আল্লাহ তাআলা প্রতিনিয়তই তাঁর মাহবুব সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম এর উপর সালাত পাঠ করছেন।

إِنَّ اللَّهَ وَمَلَائِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى النَّبِيِّ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا صَلُّوا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوا تَسْلِيمًا
আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাগণ নবীর প্রতি রহমত প্রেরণ করেন। হে মুমিনগণ! তোমরা নবীর জন্যে রহমতের তরে দোয়া কর এবং তাঁর প্রতি সালাম প্রেরণ কর। [ সুরা আহযাব ৩৩:৫৬ ]
জ্বিন ইনসান ফেরেশতা তথা গোটা সৃষ্টিই তাঁর উপর দরূদ পেশ করছে অহরহ, সর্বত্রই তাঁর স্তুতি-তাঁর গীত।কুরআনুল কারীমের শুরু হতে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি হরফ অাল্লাহর পিয়ারা হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম এর মহান শানের জীবন্ত দলিল।আর তাই তো মা অায়েশা সিদ্দীকা রাদি আল্লাহু আনহা ইরশাদ করেছেন,”কুরআনই আল্লাহর নবীর চরিত্র”।মাহবুবে খোদা সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম এবং এ সুবিশাল মর্যাদার বিস্তৃতি ও ব্যাপকতার অনুভূতি যারা স্বীয় আকিদা এর বিশ্বাসে গেঁথে নিতে পারেনি,তারা ঈমান এবং ইসলামের মজা পায়নি।পেতে পারেনা।এরা ঈমানের ক্ষেত্রে এতই বিপর্যস্ত যে,অনেক সময় তারা নূরনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম কে সাধারন মানুষের কাতারে এনে অবমূল্যায়ন করতেও দ্বিধাবোধ করেনা।অথচ হুজুর আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম এর খাটি মুহাব্বত ও তাঁর মহান শানের উপলব্দিই হচ্ছে ঈমানের মূল কথা।
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ পাক এরশাদ করেন,”আমি আপনাকে সমগ্র বিশ্ব জগতের প্রতি রহমত রূপে প্রেরন করেছি।”(পারা-১৭,সুরা আম্বিয়া,রুকু-৭)নবীগণ,রাসূলগণ ফেরেশতা এবং মুকাররাবিন প্রত্যেকেই প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম হতে রহমত প্রাপ্ত হয়েছেন। কাফিররাও সর্বোতভাবে তাঁর থেকে রহমত পেয়েছে।কিয়ামতে হাশরের ময়দানে হিসাব নিকাশ শুরু করা এবং নাজাত দেয়াও নবীজির ওসীলাতেই হবে।হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম এর আগমনে আনন্দ প্রকাশের কারনেই আবু লাহাবের জন্য সোমবার দিন আযাব সহজ করে দেয়া হয়েছে।নবীজির বরকতেই অাবু তালিবের উপর আযাব কমিয়ে দেয়া হয়েছে।(হাদীস) এই নশ্বর জগতে তিনি রহমত।কিয়ামতে,মিযানে,হাউজে কাউছার,জান্নাতে,গুনাহগার উম্মতের জন্য জাহান্নামে বস্ততঃ সর্বত্রই তাঁর রহমত ব্যাপৃত।
হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম কে প্রেরণের জন্য যুগে যুগে সমস্ত নবী ও রাসূলগণ প্রার্থনা করেছেন।তাঁর ওসীলায় আদম আলাইহিস সালাম এর তওবা গৃহীত হয়।যাঁর আনুগত্য আল্লাহর আনুগত্য এবং খোদা প্রাপ্তির পূর্বশর্ত বলে বিবেচিত হয়।যাঁকে আল্লাহ পাক সতর্ককারী ও সুসংবাদ দাতা রূপে প্রেরন করেছেন।যাঁর আগমনে তামাম মাখলুক আনন্দে মাতোয়ারা সেই নবীজির উম্মত হয়ে অামরা কেন আনন্দিত হবোনা।আমরা কেন খুশি প্রকাশ করবোনা।তবে আমাদের ভুলে গেলে চলবেনা যে অামরা শ্রেষ্ঠ নবীর শ্রেষ্ঠ উম্মত।তাই অবশ্যই ইসলামী নিয়ম নীতির মধ্যে থেকে আমাদের কে তা উদযাপন করতে হবে।

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও ওফাত দিবস। দিনটি সমগ্র বিশ্বে মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ। ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে ২৯ আগস্ট, রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ সোমবার, সূর্যোদয়ের ঠিক পূর্বমুহূর্তে, সুবহে সাদিকের সময় মহাকালের এক মহাক্রান্তিলগ্নে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। আবার তেষট্টি বছরের এক মহান আদর্শিক জীবন অতিবাহিত করে ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে ৮ জুন, ১১ হিজরি রবিউল আউওয়াল মাসের ১২ তারিখ একই দিনে তিনি পরলোক গমন করেন। দিনটি মুসলিম সমাজে ‘ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) নামে সমধিক পরিচিত।

লেখক: কবি, প্রাবন্ধিক ও গবেষক।

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




raytahost-demo
© All rights reserved © 2019
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD